Posted by : LifeStyleAble Tuesday, 4 June 2013

মেয়েটা আমার সামনেই বসা। তাকে তিনটা শব্দ বললেই ঝামেলা চুকে যায়। তিনটা মাত্র শব্দ। হোক ইংরেজীতে বা বাংলায়। রোদেলা উঠে দাঁড়াল।
“চল উঠি।”
“এখুনি উঠবি??”
“হু, বাসায় কাজ আছে আমার।”
“শীট্‌।”
“কি হল?”
“আমাকে একটু নাভিদের বাসায় যেতে হত। ওর বাসাতো ঊত্তরা। ৬ নম্বর সেক্টর।”
“চল তাহলে আমার সাথে। “
“তোর বাসা যেন কত নম্বরে??”
“৮ নম্বর।”
“ছয়ের আগে না পরে?”
“পরে। এতকিছু জেনে কি করবি??”
“তাইতো। চল যাই। এমনিতেই দেরী হয়ে গেসে। নাভিদের বাচ্চা আবার মাইর না দেয়।”
উত্তরার বাসগুলো আজকে খালি যাচ্ছে। কেন কে জানে। আমরা উঠে গেলাম একটায়। বাস সাঁ সাঁ করে ছুটছে। ভীড়ও আজকে কম। কেমনটা লাগে?? অথচ আজকে যদি আমার মেকানিকাল এক্সাম থাকতো তাহলে ঢাকার সব গাড়ি এই রোডে থাকতো। আহা, রোদেলার সাথে এক বাসে পাশাপাশি বসে যদি অনন্তকাল ছুটে চলা যেত। ওর পাশে বসে দোজখে যেতেও আমি রাজী। অথচ আজ রাস্তা ফাঁকা। কেবলই মনে হচ্ছে এই বুঝি এসে গেলাম ৬ নাম্বারে। মনে মনে ড্রাইভার ব্যাটাকে একটা গালি দিলাম। রোদেলার পাশে আর বসা হবে না। ওর কথায় চমকে উঠি-
“কিরে, মুখ কালো কেন?”
“আমার গায়ের রঙই কালো।”
“মন খারাপ নাকি??”
“মন খারাপ হবে কেন? মন ভাল।” (মনে মনে- তুই কি বুঝিস না কিছুই?)
“গুড। তোর কোন ফ্রেন্ডের বাসায় যেন যাবি??”
“নাদিম”
“তখনতো নাভিদ বললি!!”
(মনে মনে- শীট্‌। হের লাইগাই মিথ্যা বলতে চাই না। ধরা খেয়ে যাই।)
“ও। ওর ডাকনাম নাদিম। নাভিদুল আলম নাদিম।”
“ও আচ্ছা।”
মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল। রোদেলার কাছ থেকে বিদায় নিলে প্রতিবারই এমন হয় অবশ্য। বুকটা খালি খালি লাগে। খালি বুক নিয়েই বাস থেকে নেমে গেলাম। রোদেলা সামনে নামবে। আমি কাল্পনিক নাভিদুল আলম নাদিমের বাসার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম। রাস্তার ওপারে বাস কাউন্টার। কলাবাগানের একটা টিকিট কাটলাম। খালি খালি লাগা বুকটা নিকোটিন দিয়ে ভরার জন্য একটা সিগারেট ধরালাম।
বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। পকেট কাঁপিয়ে মোবাইল ভাইব্রেট করা শুরু করল। রোদেলার ফোন। কি ব্যাপার??
“হ্যালো। বল।”
“কই তুই??”
“এইত নাভিদের বাসার গেট দিয়ে ঢুকছি।”
“ওও”
“তুই কি বাসায় পৌছে গেছিস?”
“না। আমি বাসের লাইনের শেষে”
“মানে?”
“পেছনে তাকা গাধা।”
যা আছে কপালে আজ রোদেলাকে তিনটা শব্দ বলবোই।

- Copyright © Connected People -Metrominimalist- Powered by Blogger - Designed by Johanes Djogan -